দীর্ঘদিন তিলে তিলে গড়া
মূর্তিটিকে পুজো করে অবশেষে দীর্ঘ শ্রমের ও আকাংখার ধনকে পুকুর-খালনদী-সাগরে বিসর্জন দেয়া হিন্দু সংস্কৃতির ও
ধর্মের প্রধানতম রীতি।
অপরদিকে নিজেদের আকাংখা ও শ্রমের অর্জনকে সম্মান ও সংরক্ষণ করার রীতি ও মানসিকতা মুসলিম
সংস্কৃতির রীতি। মুসলিম সম্প্রদায়ের যে সকল সদস্য তাদের নিজেদের ও নিজেদের পূর্বপুরুষদের
শ্রম, ঘাম ও রক্তের বদলে অর্জিত অর্জনসমূহ যখন
সম্মান ও সংরক্ষণের পরিবর্তে বিসর্জনের রীতি গ্রহণ করে নিজ দেশ-জাতির অপূরণীয় ক্ষতি সাধন করে ও মুসলিম
বিদ্বেষী বিজাতীয়দের চরণতলে নিজেদের অস্তিত্বকে বিসর্জন দেয় তখন শুধুমাত্র আরবী নামের জন্য তাদেরকে মুসলিম বলা যাবে কি? আরব দেশসমূহের ইহুদী-খ্রিস্টান-কাফের-মুশরেকদের নামও আরবী
ভাষায় রাখা হয়। কিন্তু তাদের ধর্ম-বিশ্বাস-সংস্কৃতি ও কর্ম ইসলামসম্মত নয় বিধায় তাদেরকে মুসলিম বলা
হয় না। এমতাবস্থায় মুসলিম বিশ্বের দেশে দেশে মুসলিম নামধারী যেসব ব্যক্তি নিজ জাতি ও ধর্মের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়, নিজ জাতির অস্তিত্ব, মর্যাদা ও অর্জনকে মুসলিম বিদ্বেষীদের নিকট বিসর্জন দেয় তাদের ধর্মীয় পরিচয় বাস্তবে কি হওয়া উচিত তা নির্ণয় করা
সময়ের দাবি। এ দাবি অনুযায়ী সত্ত্বর বাস্তব ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে মুসলিম বিশ্ব সংকট থেকে উদ্ধার পাবে না। ধর্মীয় সংজ্ঞানুযায়ী যারা
আল্লাহর অস্তিত্বকে অস্বীকার করে তারা কাফের। যারা আল্লাহকে স্বীকার করে কিন্তু আল্লাহর আইনের বিরোধিতা
করে অথবা আল্লাহর সাথে অপর কাউকে শরীক করে বা আল্লাহকেও পূজা করে, মূর্তি, দেবদেবী, পীর-পুরোহিতের
নিকটও সাহায্য চায় তারা
মুশরিক। অপরদিকে যারা মসজিদ/মাহফিলে গিয়ে ইসলামের পক্ষে কথা বলে আবার মন্দির-গীর্জায় গিয়ে
দেবদেবীর স্তূতি গায় অথবা দিনের আলোয় মুসলমানদের পক্ষে কথা বলে আর রাতের আঁধারে
কাফের/মুশরিক ও ইসলামবিরোধীদের সাথে মুসলিমবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয় এবং বিজাতীয় সংস্কৃতি অনুসরণ করে তারা
মুনাফিক।
আমাদের নবী হযরত মুহাম্মদ
(সা.) কাফেরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ
করেননি। তিনি যুদ্ধ করেছেন মুশরিক, মুনাফিক ও
স্বধর্মত্যাগী মুরতাদদের বিরুদ্ধে। তাঁর যামানায় আরবে স্রষ্টায় অবিশ্বাসী লোক ছিল না কিন্তু তারা স্রষ্টার ক্ষমতাকে
বিভিন্ন দেবদেবীর মধ্যে আরোপ করে দিয়ে উক্ত দেবদেবীদের পূজা করত বিধায় রাসুল (সা.)-এর সাথে তাদের বিরোধ
ও সংঘর্ষ শুরু হয়। পাঠকবৃন্দ যদি তখনকার নামসমূহ বিশ্লেষণ করেন তবে বিষয়টি হৃদয়ঙ্গম করতে সক্ষম হবেন।
রাসুল (সা.)-এর পিতার নাম
ছিল আবদুল্লাহ (আল্লাহর জাত নামের সাথে সম্পর্কিত)। তাঁর দাদার নাম ছিল আবদুল মুত্তালিব (আল্লাহর
সিফাতী নামের সাথে সম্পর্কিত) নাম শুদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও তাদের কর্ম ও বিশ্বাস ছিল দেবদেবীদের পক্ষে। এ
জন্য তাঁরা মুসলিম ছিলেন না। এভাবে মুশরিক সর্দার আবু সুফিয়ান, খালিদ, উমর যাঁরা
পরবর্তীতে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন তাঁদের ইসলাম-পূর্ব নামসমূহ একই ছিল। মুশরিক থেকে মুসলিম হওয়ার পর
তাঁদের নামের কোনো পরিবর্তন করতে হয়নি। শুধুমাত্র বিশ্বাস ও কর্ম পরিবর্তন করতে হয়েছিল। এমতাবস্থায় বর্তমান বিশ্বের যে সকল মুসলিম নামধারী ও
পরিচয়ধারী ব্যক্তি তাদের বিশ্বাস ও কর্মে ইসলামবিরোধী তারা মুসলমান হয় বা থাকে কিভাবে? যারা “আল্লাহর উপর
পূর্ণাঙ্গ আস্থা ও বিশ্বাস’ বাক্যটিকে নিজেদের দেশের
সংবিধান থেকে উচ্ছেদ করার
পক্ষে কথা বলে এবং উচ্ছেদের জন্য মুশরিক ঠাকুর-পুরোহিতকে দায়িত্ব দেয় তারা কোন ধর্মাবলম্বী? আল্লাহর উপর আস্থা নাই ঘোষণা দেওয়ার পর বিস্মিল্লাহির রাহমানির রাহীম বলা কি সুস্পষ্ট মুনাফেকী নয়? যে রাষ্ট্রনায়করা আল্লাহর উপর আস্থা ও
বিশ্বাসকে উচ্ছেদ করার পক্ষে তাদের রাষ্ট্রধর্ম
ইসলাম থাকার যুক্তি
কোথায়? তবে কি তাদের
ইসলাম-আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের
ইসলাম থেকে ভিন্ন? তবে কি তারা নতুন কোনো ইসলাম, নতুন কোনো রাহমানির রাহীমের উপর আস্থাশীল? পাঠকবৃন্দই সিদ্ধান্ত নেবেন এরূপ বিশ্বাস ও কর্মের অনুসারী ব্যক্তি ও দলের ধর্মীয় পরিচয় কি হতে পারে?
এখন বিসর্জনের সংস্কৃতির
আলোচনায় ফিরে আসি। একশ্রেণীর আরবী নামধারী ও মুসলিম পরিচয়ধারী ব্যক্তি ১৭৫৭ সালে শুধুমাত্র ক্ষমতা দখল ও ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য
ইহুদী-খ্রিস্টান ও ব্রাহ্মণ্যবাদীদের সাথে আঁতাত করে আমাদের ৭০০ বছরের অর্জনকে ইসলামবিরোধীদের পদতলে
বিসর্জন দিয়েছিল। উক্ত শ্রেণীর অর্থ ও ক্ষমতালোভী মুসলমান নামধারীদের বিশ্বাসঘাতকতার জন্য
আমাদের ১৭৫৭-১৯৪৭ সময়কালের ও ১৯৪৭-১৯৭১ সময়কালের মৌলিক অর্জনসমূহ ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে এবং ১৯৭১-২০১১ সন অবধি সকল মৌলিক অর্জন
ব্রাহ্মণ্যবাদের পদতলে, ঠাকুর দেবতার
বেদীমূলে বিসর্জিত হওয়ার প্রহর গুনছে। কেউ হয়তো প্রশ্ন তুলতে পারেন আপনাদের মধ্যে কি দেশ জাতি
বিরোধীরা সংখ্যাগিরষ্ঠ? প্রশ্নের উত্তর হবে না। তবে
দেশ-জাতি-ধর্ম বিরোধী বিভীষণরা আমাদের জাতশত্রু বিজাতীয়দেরকে সাহায্য করায় আমরা আমাদের অর্জনকে
ধরে রাখতে সক্ষম হচ্ছি না এবং দেশী-বিদেশী চক্রান্তে আমরা উপযুক্ত নেতৃত্ব নির্বাচন করতে সক্ষম হচ্ছি না। সৎ-যোগ্য ও দূরদর্শী নেতৃত্বের
অবর্তমানে জাতি বহুধাবিভক্ত ও শক্তিহীন হয়ে পড়েছে। ১৭৫৭-২০১১ অবধি আমাদের প্রধান প্রধান মৌলিক
অর্জন ও বিসর্জনের ঘটনাবলী নিম্নরূপ:
উক্ত অর্জন ও বিসর্জনের
আলোচনার পূর্বে ভারতবর্ষ থেকে ৭০০ বছরের মুসলিম শাসন বিলুপ্তির কারণসমূহ আলোচনা করা জরুরি।
নিরক্ষর ও কিশোর সম্রাট
আকবর তাঁর কুচক্রি পরামর্শদাতাদের পরামর্শে মোগল সাম্রাজ্যের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা
সহযোগী ও তাঁর অভিভাবক রৈরাম খানকে পদচ্যুত ও
হত্যা করার ব্যবস্থা করে
নিজে সৎ ও যোগ্য অভিভাবক হারান। এমতাবস্থায় ভারতের বর্ণহিন্দু কুচক্রীরা আকবরকে নিজেদের কন্যা
ও বোন উপঢৌকন দিয়ে মোঘল রাজদরবারে নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠা করে, আকবরকে ইসলাম ও মুসলিম বিদ্বেষী কাজকর্মে লিপ্ত করায় এবং আকবর-পরবর্তী মোগল শাসকদের মধ্যে
ভ্রাতৃঘাতী ও আত্মঘাতি
দ্বন্দ্ব-সংঘাত সৃষ্টি করে মুসলিম শক্তিকে হীনবল করে। আকবর ও আকবরের পরবর্তী মোঘল শাসকদেরকে ব্রাহ্মণ্যবাদী সংস্কৃতিতে
নিমজ্জিত করে। শাসকদের
দেখাদেখি সাধারণ মুসলমানরাও মুসলিম সংস্কৃতির পরিবর্তে হিন্দু সংস্কৃতিতে আসক্ত হয়ে নিজেদের অস্তিত্ব, মর্যাদা, শক্তি সামর্থ
হারিয়ে পতন নিশ্চিত করে।
১৭৫৭ সময়কালে মুসলমানদের অবস্থা বুঝার জন্য দুটি উদ্ধৃতি উল্লেখ করা হলো।
১. মুসলিম সম্প্রদায়ের নিম্নশ্রেণীর লোকজন
হিন্দু রায়তদের আচার-অনুষ্ঠান এমনভাবে পালন করতো যে, তাদেরকে শুধু অনুষ্ঠানে নয়, বরং নামেও পৃথক করা দুষ্কর হতো। মুসলমানদের নামের মধ্যে এরূপ নামও ছিল যথা- গোপাল, নেপাল, গোবর্ধন ইত্যাদি।
(আবদুল বারী, The Reform Movement in Bengal, History of The Freedom Movement : Vol. 1, 1960)
২. হিন্দু ধর্ম থেকে
ধর্মান্তরিত বাংলার অসংখ্য মুসলমান তাদের প্রাক্তন ধর্মীয় পদ্ধতি ও দেবদেবীর প্রতি আকর্ষণ বজায় রাখে। তাদের কেউ কেউ সর্পদেবী মনসা, ব্যাঘ্র দেবতা দক্ষিণা রায়, বাসন্তী দেবী, শীতলার পূজাকে নবরূপ দান করে। কেউ কেউ শিবের পূজাও করতো। সঠিক ইসলাম সম্পর্কে অজ্ঞতাই এর প্রধান কারণ। (ঐ vol-111 part-1)
আমার দৃঢ় বিশ্বাস তৎকালে
মাতৃভাষায় কোরআনের অনুবাদ, হাদিসের অনুবাদ ও ইসলামী সাহিত্য না
থাকায় ধর্মান্তরিতরা ইসলামের মর্মবাণী উপলব্ধি করতে সক্ষম হতো না বিধায় পূর্ব ধর্মের আচার-অনুষ্ঠান
সম্পূর্ণভাবে পরিত্যাগ করতে সক্ষম হতো না
মুসলমানের অন্তর যখন আল্লাহর উপর পরিপূর্ণ বিশ্বাস স্থাপন
করে এবং তাঁর রাসুল (সা.)-এর
কর্মপন্থাকে নিঃশর্ত অনুসরণ করে তখন সে হয় বিশ্বের সবচেয়ে নৈতিক মানসম্পন্ন সাহসী ব্যক্তি। অপরদিকে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের উপর ঈমানের ব্যাপারে
মুসলমানের অন্তর যদি দোদুল্যমান অবস্থায় থাকে অথবা বেখবর থাকে তখন শুরু হয় মুসলমানদের নৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক অবক্ষয়। এমতাবস্থায় উক্ত মুসলমান আল্লাহকে বাদ
দিয়ে পীর পূজা, কবর পূজা, দরগাহ পূজা,
দেবদেবী পূজায় লিপ্ত হয় এবং চূড়ান্ত পর্যায়ে নিজেদের ধ্বংস ডেকে আনে।
আধুনিক ভারতের মুসলমানদের
উত্থানের রূপকার হযরত শাহ ওয়ালী উল্লাহ মুহাদ্দেস দেহলভী (১৭০৩-১৭৬২) স্বচক্ষে ভারতীয় মুসলমানদের
১৭৫৭ সময়কালের পতন
প্রত্যক্ষ করেছেন। মুসলিম সমাজ, রাষ্ট্র ও ধর্মের
পতনের যেসব কারণ তিনি
চিহ্নিত করেছেন তা হলো-
১. আত্মকলহ ও ভ্রাতৃঘাতী
সংঘাত।
২. শরীয়তবিরোধী বিদআতের
প্রসার।
৩. ভ্রান্ত সুফী মতবাদের
প্রসার।
৪. হিন্দু দেবদেবীর পূজা
অর্চনা।
৫. পীর পূজা, কবর পূজা, দরগায় মানত।
৬. তাবিজ, কবজ, মাদুলী ও কুলজীতে
বিশ্বাস।
৭. হোলি উৎসব উদযাপন
(সমকালীন মোঘল সম্রাটগণ ও নবাব সিরাজউদ্দৌলা এ অনুষ্ঠান পালন করতেন)।
৮. নারীর উত্তরাধিকারের
শরীয়তী আইন লঙ্ঘন (পাঞ্জাব ও যুক্ত প্রদেশে)।
৯. মাতৃতান্ত্রিক
উত্তরাধিকার প্রথার প্রচলন (মালাবারে)।
১০. জ্যোতিষশাস্ত্র,
ভবিষ্যদ্বাণী ও ভূতপ্রেতে বিশ্বাস।
১১. বিদআতী পীর, ফকির ও ধর্মনেতা।
[বি. দ্র. : বাংলাদেশের
বর্তমান সরকার, সরকারি দল ও মহাজোটের
শরীক দলগুলি উপরোক্ত
পতনের কারণসমূহের প্রায় সবগুলির পক্ষে অবস্থান নিয়েছে এবং সঠিক ইসলাম, সমাজ ও রাষ্ট্র সংস্কারকদের দমনে তৎপর রয়েছে। তবে কি তারা বাংলাদেশ ভূখণ্ডে মুসলিম শাসনের
বিলুপ্তি চায়? তারা কাদের স্বার্থে এসব করছে?]
মুসলমানদের পতনের উক্ত
কারণসমূহ চিহ্নিত করে শাহ ওয়ালীউল্লাহ এক যুগধর্মী সংস্কার আন্দোলনের গোড়াপত্তন করেন। আন্দোলনের
সূতিকাগার হিসেবে তিনি তাঁর
পিতা আবদুর রহীম কর্তৃক দিল্লীর মেহেন্দিয়ুকা মহল্লায় স্থাপিত মাদ্রাসাকে ব্যবহার করেন। ছাত্রদেরকে সঠিক ইসলামী
শিক্ষায় শিক্ষিত করে
সমগ্র ভারতে ছড়িয়ে দেন। তাঁর মাদ্রাসার ছাত্ররাই পরবর্তী ১০০ বছর প্রত্যক্ষভাবে ভারতীয় মুসলমানদেরকে নেতৃত্ব প্রদান
করেন। বিংশ ও একবিংশ
শতাব্দীতে ও তার শিক্ষা জীবন্ত রয়েছে। তাঁর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ শিষ্য ও সহযাত্রীবৃন্দ যথাক্রমে শাহ আবদুল আজিজ,
শাহ ইসমাইল শহীদ, মাওলানা আবদুল
হাই, সৈয়দ আহমদ বেরেলভী, মাওলানা এনায়েত আলী, মাওলানা বেলায়েত
আলী, মাওলানা কেরামত আলী জৌনপুরী, হাজী শরীয়ত উল্লাহ, সৈয়দ নিসার আলী তিতুমীর ও স্যার সাইয়েদ আহমদ খান। উল্লেখ্য, ১৮৫৭ সালের
স্বাধীনতা যুদ্ধ বিষয়ে স্যার সাইয়েদ আহমদ খান ভিন্ন পন্থা অবলম্বন করলেও তাঁর মানস গঠন হয়েছিল শাহ
ওয়ালীউল্লাহর চিন্তাধারায়
সিক্ত হওয়ার মাধ্যমে। এ সংক্রান্ত প্রামাণ্য তথ্য নিম্নরূপঃ
১. স্যার সৈয়দ আহমদ খান নকসবন্দীয়া-মুজাদ্দেদীয়া তরীকার
বুজুর্গ শাহ গোলাম আলীর শিষ্য
হন। গোলাম, আলী হযরত শেখ আহমদ সরহিন্দের তরীকার লোক
ছিলেন। (এস এম ইকরাম, Modern
Muslim India and the Birth of Pakistan, P-20)
২. দিল্লীতে অবস্থানকালে
স্যার সৈয়দ আহমদ খান ওহাবী আন্দোলন (সংস্কার আন্দোলনের বৃটিশ প্রদত্ত উদ্দেশ্যমূলক নাম) এর
সপক্ষে একটি পুস্তিকা
প্রকাশ করেন। (ড. মুহাম্মদ ইনাম-উল-হক, ভারতের মুসলমান ও
স্বাধীনতা আন্দোলন পৃ. ৬৪)
১৮৫৭ সালের রক্তাক্ত
স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রশ্নে শাহওয়ালী উল্লাহর অনুসারীরা ২ ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। বৃহত্তর অংশ ইঙ্গ-হিন্দু
শাসন শোষণের বিরুদ্ধে
সশস্ত্র সংগ্রামের পক্ষে আর অপরপক্ষ স্যার সাইয়েদ আহমদ খানের নেতৃত্বে শান্তিপূর্ণ প্রস্তুতি গ্রহণের পক্ষে।
পরবর্তীকালে একপক্ষের নাম হয়
দেওবন্দপন্থী অপর পক্ষের নাম হয় আলীগড়পন্থী। ১৮৫৭ সালের যুদ্ধে ও তৎপরবর্তী দমন-পীড়নে দেওবন্দপন্থীরা
প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। ধ্বংসস্তূপের উপর স্যার সাইয়েদ আহমদ খান আলীগড় আন্দোলন প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর সুযোগ্য উত্তরসূরিরা হলো নবাব
মুহসিন- উল-মূলক (১৮৩৭-১৯০৭),
নবাব ভিখারউল মুলক (১৮৪১-১৯১৭), নবাব আবদুল লতিফ (১৮২৮-১৮৯৩), সৈয়দ আমীর আলী (১৮৪৯-১৯২৮) এবং মহামান্য আগা খান, নবাব স্যার সলিমুল্লাহ, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক ও মোহাম্মদ আলী জিন্নাহসহ অসংখ্য জাতীয়
ও আঞ্চলিক নেতৃবৃন্দ।
জিহাদের পক্ষের মুসলিম নেতৃবৃন্দ সমগ্র ভারতে মুসলিম শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠায় প্রচেষ্টা চালিয়েছেন। পক্ষান্তরে
সমঝোতাপন্থী আলীগড় আন্দোলনের উত্তরসূরিরা পরবর্তীতে ভারতের একটি ক্ষুদ্র অংশে মুসলিম শাসন কায়েম করতে সক্ষম হন
১৯৪৭ সালে। আমাদের পূর্বপুরুষদের শতাব্দীব্যাপী বিরামহীন শ্রমের ফসল পাকিস্তানকে আমরা
বিসর্জন দিয়েছি ১৯৭১ সালে এবং বাংলাদেশকে বিসর্জন দেওয়ার কার্যাবলী এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে উপনীত হয়েছে।
১৭৫৭-১৯৪৭ সময়কালে আমাদের
কোটি কোটি পূর্বপুরুষ ইঙ্গ-হিন্দু প্রতিপক্ষের হাতে আহত-নিহত, পঙ্গু-দ্বীপান্তর-দেশান্তরী হওয়ার বিনিময়ে আমাদের মৌলিক অর্জনসমূহ
ছিল-
১. পৃথক মুসলিম
জাতিসত্তার স্বীকৃতি।
২. সংস্কার আন্দোলনের
মাধ্যমে পরিশীলিত ও জাগ্রত একটি মুসলিম সমাজ।
৩. ভারতবর্ষের দুই
প্রান্তে আমাদের জন্য আলাদা একটি নিজস্ব রাষ্ট্র।
৪. মুসলিম স্বার্থ রক্ষায়
পৃথক নির্বাচন ব্যবস্থা।
৫. আধুনিক গণতন্ত্রে
উজ্জীবিত একটি সচেতন জাতি। (উল্লেখ্য, এ বিষয়ে কেউ কেউ দ্বিমত
পোষণ করতে পারেন। এ সংক্রান্ত আমার বক্তব্য হলো- এ দেশের জনগণ যখনই সুষ্ঠু
গণভোটের সুযোগ পেয়েছে তখনই তারা ভোটের মাধ্যমে সঠিক ও যৌক্তিক রায় প্রদান করেছে। দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্রে
প্রতিষ্ঠিত একশ্রেণীর নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি গণরায়কে বানচাল করেছে। গণতন্ত্র হত্যা করেছে, দেশকে অনিশ্চয়তার দিকে নিয়ে গেছে। কিন্তু জনগণ বারবার নিজেদের গণতান্ত্রিক অভিব্যক্তির
সুস্পষ্ট স্বাক্ষর রেখেছে।)
দীর্ঘদিনের অর্জনসমূহ
বিসর্জনের ধারাবাহিকতা :
১. পৃথক মুসলিম
জাতিসত্তার স্বীকৃতির মাধ্যমেই আমরা পাকিস্তান অর্জন করেছিলাম। কিন্তু আমাদের জাতির একটি অংশ ১৯৪৭-এর স্বাধীনতার পরপরই ভাষার প্রশ্নে অসহিষ্ণু হয়ে
মুসলিম জাতিসত্তার মূলে কুঠারাঘাত করে ভাষাভিত্তিক জাতীয়তার বেদীমূলে ধর্মীয় জাতীয়তাকে
বিসর্জন দেয়। অথচ ধর্মীয় জাতীয়তাই আমাদের
১৯৪৭ সালের স্বাধীনতা অর্জনের প্রধান উপাদান ছিল। একথা শতভাগ নিশ্চিত যে, ১৯৪৭-এর স্বাধীনতা ও মানচিত্রই আমাদের স্বাধীনতার মূল ভিত্তি।
২. ১৯৪৭ সালে আমাদের
মধ্যে অনেক সৎ, যোগ্য, নির্লোভ ও দূরদর্শী নেতৃবৃন্দ ছিল এবং আমদের জনগোষ্ঠীও ছিল ঐক্যবদ্ধ, উদীয়মান ও বিকাশমান। আমাদের একশ্রেণীর ক্ষমতা ও অর্থের লোভ এবং বিদেশী চক্রান্তে আমরা আমাদের সৎ
লোকদেরকে দৃশ্যপট থেকে বিদায় করেছি এবং অসৎ নেতৃত্বকে বরণ করে নিয়েছি। এতে করে সমগ্র জাতি খুব দ্রুত নৈতিক অবক্ষয়ের
শিকার হয়েছে এবং বহুধা বিভক্ত হয়েছে।
৩. ১৯৪৭ সালের পাকিস্তান
অর্জনকে অনেকে ভুল ও অযৌক্তিক বলে আখ্যায়িত করছে। অথচ আমাদের বিজ্ঞ নেতৃবৃন্দ ও সমগ্র জাতি
১৯৪৬ সালে ঐক্যবদ্ধ
হয়ে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠায় ভোট প্রদান করেছিল। ১৯৪৬ সালের নির্বাচনে ১১৯ জন মুসলিম প্রার্থীর মধ্যে ১১৬ জনকে
বেঙ্গল এসেম্বলীতে
জয়যুক্ত করে পাকিস্তান সৃষ্টির পক্ষে রায় দিয়েছিল। একশ্রেণীর লোক বর্তমানে এদেরকে সমাজদ্রোহী-দেশদ্রোহী বলে হেয়প্রতিপন্ন করছে। অথচ
যাদেরকে দেশদ্রোহী হিসেবে আখ্যা দেয়া হচ্ছে তাঁরা ১৯০ বছরের ইঙ্গ-হিন্দু শাসন থেকে শিক্ষা নিয়ে
হিন্দু ভারতের গোলামী
থেকে নিজেদেরকে রক্ষার জন্য পাকিস্তানের পক্ষে ভোট দিয়েছিল।
৪. দীর্ঘদিন
আন্দোলন-সংগ্রাম করে অবশেষে স্যার সৈয়দ আমীর আলীর নেতৃত্বে মুসলিম স্বার্থ রক্ষায় পৃথক নির্বাচন
ব্যবস্থা আদায় করা হয়েছিল। ১৯১৬ সালের চুক্তির মাধ্যমে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস বিষয়টি
মেনে নিয়েছিল। অথচ
আমাদের একশ্রেণীর ক্ষমতালোভী নেতা ও দল নিজেদের ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য জাতীয় স্বার্থকে
বিসর্জন দিয়ে অখণ্ড- ভারতে বিশ্বাসী কংগ্রেস
দলের সাথে চুক্তি করে পৃথক নির্বাচন ব্যবস্থা বাতিল করেছে। যুক্ত নির্বাচনের কুফল সম্পর্কে
স্যার সৈয়দ আমীর আলীর
বক্তব্য ছিল, “যুক্ত নির্বাচন প্রথা চালু হলে
হিন্দুরা শুধু ঐসব মুসলমানদেরকে
ভোট দেবে যারা তাদের তল্পীবাহক পুতুল হবে।” আমাদের দেশের বর্তমান অবস্থা পর্যালোচনা করলে আমরা সৈয়দ
আমীর আলীর আশঙ্কাকে
প্রত্যক্ষ করতে পারব। বর্তমানে হিন্দুদের তল্পীবাহক পুতুল মুসলমানরা যুক্ত নির্বাচনের মাধ্যমে এমপি হয়ে আমাদের
সর্বনাশ সাধন করছে। এ
দেশের নিষ্ঠাবান মুসলমানরা এখন নিজ দেশে পরবাসী।
৫. আমরা আধুনিক গণতন্ত্রে
উজ্জীবিত আমাদের জাতিকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছি। এ বিষয়ে সৎ ও প্রবীণ রাজনীতিবিদ, ভাষা সৈনিক অলি আহাদ বলেছেন, “বর্তমানে সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক উপায়ে সৎ নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করার সমস্ত পথ রুদ্ধ করে দেয়া হয়েছে।
পেশীশক্তি ও কালো টাকার মালিক
ছাড়া নির্বাচনে মনোনয়ন লাভ এবং জিতা যায় না। কোটি টাকা না থাকলে বা সন্ত্রাসী লালন না করলে রাজনীতি করা
যায় না।... বর্তমানে
রাজনীতিকরা ক্ষমতা লাভের আশায় অপশক্তিকে দেশে প্রতিষ্ঠা করে তার ছত্রছায়ায় কৃত্রিম ক্ষমতা ভোগকে সত্যিকার
স্বাধীনতা এবং দেশ, জাতির উন্নতি বলে প্রচার করে। ১৭৫৭ সাল থেকে মীরজাফর-উমিচাঁদ ও তাদের ভাবশিষ্যরা অদ্যাবধি এ ধারা
অব্যাহত রেখেছে। এভাবে সৎ
রাজনীতিকে অসৎ রাজনীতির বেদীমূলে বিসর্জন দেয়া হয়েছে। দেশপ্রেমিক রাজনীতিকে দেশদ্রোহীতার বেদীমূলে
বিসর্জন দেয়া হয়েছে।
বিসর্জন-পরবর্তী জাতীয়
পতনের দৃশ্যাবলী
আমাদের সুযোগ্য পূর্ব
পুরুষদের দীর্ঘ ১৯০ বছরের অর্জনসমূহ আমরা পর্যায়ক্রমে বিসর্জন দিয়ে বর্তমানে দেউলিয়া অবস্থায় উপনীত হয়েছি। দেউলিয়া ঘোষণাটি শুধু
অবশিষ্ট রয়েছে। আমাদের একশ্রেণীর রাজনীতিকরা গণতন্ত্রের মাধ্যমে অর্জিত পাকিস্তান ও বাংলাদেশে
গণতন্ত্রকে নির্বাসিত করেছে, সেনাবাহিনীকে
রাজনীতিতে টেনে এনে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে দাঁড় করিয়েছে। দলীয়করণ, আত্মীয়করণ ও আঞ্চলিকীকরণ-এর মাধ্যমে সরকারের প্রধান প্রধান অঙ্গসমূহ যথা আইন-বিচার ও শাসন
বিভাগকে পঙ্গুবিতকির্ত ও অচলাবস্থায় উপনীত করেছে। বিচার বিভাগের ঘাড়ে বন্দুক রেখে দেশ পরিচালনার গাইডলাইন
সংবিধানকে কচুকাটা করা হয়েছে, আমাদের প্রতিরক্ষা সামর্থ ও
নীতিকে আমাদের শত্রুদের হাতে সমর্পণ করা হয়েছে, আমাদের ’৪৭ সালে অর্জিত
সীমান্তকে আমাদের প্রতিপক্ষের নিয়ন্ত্রণে তুলে দেয়া হয়েছে। সীমান্তরক্ষী বাহিনী ও সেনাবাহিনীকে পঙ্গু করা
হয়েছে, আইনশৃংখলা বাহিনীকে
জাতীয় বাহিনীর পর্যায় থেকে নামিয়ে এনে দলীয় পেটোয়াবাহিনীতে পরিণত করা হয়েছে।
উদ্দেশ্যমূলক কার্যকলাপের দ্বারা এলিট ফোর্স র্যাবকে মাত্র আড়াই বছরে চরমভাবে বিতর্কিত করা হয়েছে।
এমতাবস্থায় যে সকল অর্জনের মাধ্যমে আমরা ’৪৭ সালে স্বাধীন
হয়েছিলাম সে সকল অর্জনকে বিসর্জনের মাধমে আমরা পরাধীনতার গভীর গিরিখাদের কিনারায় উপনীত হয়েছি। উল্লেখ্য,
অখণ্ড- ভারত তত্ত্বে বিশ্বাসী ভারতীয় জাতীয়
কংগ্রেসের এদেশীয় দোসররাই আমাদের সকল অর্জনকে
বিসর্জন দিয়েছে। এ অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে না পারলে আমাদের পতন অবশ্যম্ভাবী।
আমাদের করণীয়
১. শাহ ওয়ালী উল্লাহ ও
হাজী শরীয়ত উল্লাহর সংস্কার কর্মসূচি এবং স্যার সাইয়েদ আহমদ খান-এর পুনর্গঠন কর্মসূচিকে সমন্বয় করে জাতীয় পুনরুত্থানের রূপরেখা
প্রণয়ন এবং আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে উক্তরূপভাবে ঢেলে সাজানো।
২. সরকারি ও বেসরকারি
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বিশ্ববিদ্যালয়ে সত্যিকারের ইতিহাস চর্চাকে সর্বাধিক গুরুত্ব প্রদান করা, যাতে জনগণ ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে সুন্দর আগামী বিনির্মাণে এগিয়ে আসে এবং জাতীয়
শত্রুমিত্র চিহ্নিত করতে
পারে।
৩. সত্যিকারের
ইতিহাসভিত্তিক ও জাতিগঠনমূলক চলচ্চিত্র, নাটক, সাহিত্য রচনা, চর্চা ও প্রদর্শন।
৪. ধর্মভিত্তিক
জাতীয়তাবোধকে শক্তিশালী ও সুসংহতকরণ। মনে রাখতে হবে এটাই আমাদের টিকে থাকার প্রধান
রক্ষাকবচ। পরিশেষে ভারতীয় মুসলমানদের প্রধানতম অনুসরণীয় নেতা ও সমাজ সংস্কারক শাহ
ওয়ালী উল্লাহর উপলব্ধি ও বাণী উদ্ধৃত করে প্রবন্ধ শেষ করছি। তাঁর উপলব্ধি- সামাজিক ও
অর্থনৈতিক ভারসাম্যের অভাবে সমাজ, রাষ্ট্র এবং
জাতীয় জীবনে বিশৃঙ্খলা, বিপর্যয়, ব্যবহারিক বিকৃতি ও নৈতিক অবক্ষয়ের সূচনা করে। সমাজ জীবনে
অর্থনৈতিক ভারসাম্য বিধান একান্ত জরুরি। কোরআনের ব্যবহারিক মূল্য প্রদর্শন এবং
অর্থনৈতিক সমতা বিধান একান্ত জরুরি। এ দুটি ছিল শাহ ওয়ালী উল্লাহর সংস্কার
কর্মসূচির বুনিয়াদ। (ওবায়দুল্লাহ সিন্ধি, শাহ ওয়ালীউল্লাহর রাজনৈতিক চিন্তাধারা পৃ. ১৮)।
তাঁর দিক নির্দেশনা-
১. ইসলামের নীতি ও
বিধানগুলিকে যুক্তি ও বিবেকের সাহায্যে প্রতিষ্ঠিত করার সময় এসেছে। কেবল আল্লাহর
আদেশ বলে মানুষ তা পালন করবে সে যুগ আর নাই। (আবু মহামেদ হাবিবুল্লাহ, সমাজ, সংস্কৃতি ও
ইতিহাস, পৃ. ১২১)।
২. মুসলমানদের মধ্যে
যতদিন জিহাদের মানসিকতা বজায় ছিল ততদিন তাদের বিজয় ও সম্মান অব্যাহত ছিল, কিন্তু যখন থেকে এ মানসিকতা দূর হয়েছে তখন থেকে তারা
সর্বত্র অপমানিত ও ঘৃণিত হয়েছে। (জি.এন. জালবানী, লাইফ অফ শাহ ওয়ালীউল্লাহ, পৃ. ৬২)।
বাংলাদেশে যারা ইসলামের
কথা বলেন, ইসলামী আন্দোলনের কথা
বলেন, তাদের প্রতি আমার আহ্বান- আপনারা অসংখ্য
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা না করে শাহ ওয়ালী উল্লাহর দিল্লী মাদ্রাসার মতো একটি
মাদ্রাসা, ইমাম খোমেনী পরিচালিত কোম
মাদ্রাসার ন্যায় একটি মাদ্রাসা অথবা স্যার সৈয়দ আহমেদ খানের মতো আলীগড়
বিশ্ববিদ্যালয়-এর ন্যায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনা করুন। ব্যবসার
জন্য অসংখ্য মাদ্রাসা ও বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন না করে দেশ-জাতি গঠন ও ধর্ম রক্ষার
জন্য একটি যুগোপযোগী শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলুন। তাহলে দেশ-জাতি-ধর্ম রক্ষা পাবে।
সম্পাদকঃ মাসিক ইতিহাস অন্বেষা।
No comments:
Post a Comment